ছবি তোলার কতদিন পর এনআইডি কার্ড পাওয়া যায়?

এনআইডি কার্ডের জন্য ছবি তুলে ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট জমা দিয়ে এসেছেন, কিন্তু আইডি কার্ড এখনো পাননি? তাহলে জেনে নিন ছবি তোলার কতদিন পর এনআইডি কার্ড পাওয়া যায়।

ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য বহু মানুষ বিভিন্ন সময়ে আবেদন করে থাকে। আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের পর নির্দিষ্ট একটি স্থানে আইডি কার্ডের ছবি তোলার জন্য ডাকা হয়। ছবি ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়ার পর এনআইডি কার্ড পেতে দীর্ঘদিন সময় লাগে। 

এক্ষেত্রে আমাদের আইডি কার্ডটি হয়েছে কি-না কিংবা কখন হবে, সে সম্পর্কে আমাদের নানান প্রশ্ন জাগে। অনেক সময় ১ মাসের বেশি হয়ে গেলেও আইডি কার্ডের কপি অনলাইনে পাওয়া যায় না। 

এমতাবস্থায়, ছবি তোলার কতদিন পর এনআইডি কার্ড পাওয়া যায় এবং আইডি কার্ডটি হয়েছে কি-না তা যাচাই করা পদ্ধতি জানা গুরুত্বপূর্ণ। তাই এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে পারবেন এই ব্যাখ্যা থেকে।

ছবি তোলার কতদিন পর এনআইডি কার্ড পাওয়া যায়?

ছবি তোলার পর এনআইডি কার্ড পেতে ১৫ দিন থেকে ১ মাস সময় লাগে। তবে কর্মদিবসের বিচ্যুতি কিংবা অন্যান্য সমস্যার কারণে কিছুটা সময় বেশি লাগতে পারে। 

সাধারণত ভোটার আইডি কার্ডের নিবন্ধন করে ছবি তোলার পর, আবেদনকারীর এনআইডি সম্পর্কিত সকল তথ্য নির্বাচন কমিশন অফিসে পাঠানো হয়। তারপর সেই তথ্য প্রক্রিয়াকরণ করে ১৫ দিনের মধ্যেই NIDW সার্ভারে সাবমিট করা হয়। 

তাই ভোটার নিবন্ধন করার ১৫ দিন পর অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড চেক করলেই জানা যায় আইডি কার্ডটি হয়েছে কি-না।

কিন্তু, আপনি যখন আবেদন করবেন তখন যদি জনগণের আবেদনের পরিমাণ বেশি হয়, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই সকলের এনআইডি তৈরি হতে বেশি সময় লাগবে।

সরকারিভাবে চার বছর পর পর যেই ভোটার হালনাগাদ কর্মসূচি পরিচালিত হয়, সে সময় আবেদন করলে আইডি কার্ড পেতে ২-৩ মাস সময়ও লাগতে পারে।

যাইহোক, ছবি তোলা ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেওয়ার পর অনলাইনে আইডি কার্ড চেক করে, আইডি কার্ডটি তৈরি হয়ে থাকলে তার অনলাইন কপি ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারবেন।

আরও পড়ুনঃ Services nidw gov bd | NID কার্ডের সকল সেবা এক ঠিকানায়।

ছবি তোলার কতদিন পর অনলাইন কপি পাওয়া যায়?

ছবি তোলার পর ৭-১৫ দিনের মধ্যেই বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন থেকে NIDW সার্ভারে আইডি কার্ডের তথ্য আপলোড করা হয়। তাই ছবি তোলার ১৫ দিন পরই আইডি কার্ডের অনলাইন কপি পাওয়া যায়। তবে কিছু ক্ষেত্রে ১ মাসেরও বেশি সময় লাগতে পারে।

সাধারণত ভোটার নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার পর সকল তথ্য যাচাই বাছাই করে, স্থানীয় উপজেলা নির্বাচন অফিসে আইডি কার্ডের ছবি তোলার জন্য ডাকা হয়।

এ সময় বায়োমেট্রিক তথ্য হিসেবে ছবি, ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও আইরিস স্ক্যান করে রাখা হয়। তারপর আনুমানিক ১ মাসের মধ্যে প্রত্যেকটি ভোটারের দেওয়া মোবাইল নাম্বারে এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়।

কিন্তু অনেক বেশি ভোটার একসাথে আবেদন করে থাকলে, নানারকম প্রতিবন্ধকতার কারণে সকালের নিকট ১০৫ নাম্বার থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এসএমএস পাঠানো সম্ভব হয় না। এখনো অনেকেই ভাবে তাদের আইডি কার্ড এখনো তৈরি হয়নি। 

কিন্তু এসময় যদি তারা অনলাইনে তাদের এনআইডি কার্ড চেক করে, তাহলে দেখতে পাবে অধিকাংশেরই এনআইডি কার্ড তৈরি হয়ে গেছে। তখন এনআইডি কার্ডের অনলাইন কপি বের করা যায়। 

১০৫ নাম্বার থেকে এসএমএস না পেয়ে থাকলে, ভোটার আবেদনের সময় পাওয়া ফরমের ফরম নাম্বার দিয়েই আইডি কার্ড অনলাইনে যাচাই করা যায়। এভাবে আপনিও যাচি করে আপনার আইডি কার্ডের অনলাইন কপিটি বের করতে পারবেন।

ভোটার আইডি কার্ড পেতে কতদিন লাগে ২০২৪

ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন করার পর আইডি কার্ড পেতে ১ মাস কিংবা কিছুটা বেশি সময় লাগতে পারে। 

সাধারণত এনআইডি কার্ডের জন্য আবেদন এবং বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান করার পর ১৫ দিনের মধ্যেই NIDW সার্ভারে ভোটারের যাবতীয় তথ্য আপলোড করা হয়। অর্থাৎ ১৫ দিন পরেই অনলাইনে চেক করে আপনার আইডি কার্ডটি পেতে পারেন।

কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এন আইডি কার্ড পাওয়ার এই সময়কাল ১ মাস বা তারও বেশি দীর্ঘ হতে পারে। যাইহোক, আমরা সামগ্রিকভাবে বলতে পারি ২০২৪ সালে আবেদন করলে ভোটার আইডি কার্ড পেতে ১ মাস বা ৩০ দিন সময় লাগতে পারে।

আরও পড়ুনঃ স্মার্ট কার্ড কিভাবে পাবো ও কখন পাবো জেনে নিন।

ভোটার আইডি কার্ড কখন পাবো?

ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করার ১ মাসের মধ্যেই আইডি কার্ডের অনলাইন কপি সংগ্রহ করতে পারবেন। তবে মূল আইডি কার্ড বা স্মার্ট কার্ড পেতে কয়েক মাস কিংবা কয়েক বছরও সময় লাগতে পারে।

অন্যদিকে, যারা ১৮/১৬ বছরের কম বয়সী কিন্তু এলাকাভিত্তিক ভোটার হালনাগাদের সময় এনআইডি নিবন্ধন করেছেন, তারা এখন ভোটার আইডি কার্ড নাও পেতে পারেন। বরং তাদের আইডি কার্ড দেওয়া হবে তাদের ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার পর। 

আবার অনেকেই ১৮ বছরের বেশি বয়সী হয়ে, এনআইডি নিবন্ধনের অনেক দিন পরও আইডি কার্ড পায়নি। এর পিছনে বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক কারন, কাজের চাপ কিংবা সার্ভারের সমস্যাও থাকতে পারে। যার ফলে আইডি কার্ড পেতে সময় লাগছে।

কিন্তু যারা সরাসরি উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে ভোটার নিবন্ধন করেছেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা ৩০ দিনের মধ্যে আইডি কার্ডের SMS পেয়ে থাকে। ১০৫ নাম্বার থেকে পাঠানো এই এসএমএস-এ সেই ব্যক্তির nid নাম্বার দেওয়া হয়। 

এই এনআইডি নাম্বার ব্যবহার করেই অনলাইনে আইডি কার্ড চেক করে তা ডাউনলোড করা যায়। তারপর লেমিনেটিং করে সর্বত্র ব্যবহার করা যায়।

ভোটার এসএমএস না আসলে কিভাবে এন আইডি কার্ড পাওয়া যায়?

ভোটার নিবন্ধন করার পর ভোটার এসএমএস না আসলেও, ভোটার স্লিপ নাম্বার ও জন্ম তারিখ দিয়ে nid কার্ড চেক করে তা তৈরি হয়েছে কি-না জানা যায়। যদি আইডি কার্ডটি তৈরি হয়ে থাকে তাহলে অনলাইন থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন।

এন আইডি কার্ড কিভাবে চেক করবেন সে বিষয়ে নিচে আমাদের বিস্তারিত আলোচনা এবং অন্য পোস্ট রয়েছে।

এনআইডি কার্ড পাওয়ার উপায়

এনআইডি কার্ড পাওয়ার উপায় হলো- প্রথমে ভোটার নিবন্ধনের জন্য আবেদন করে, তারপর স্থানীয় উপজেলা নির্বাচন অফিসে আইডি কার্ডের বায়োমেট্রিক তথ্য হিসেবে ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ছবি দেওয়া ও আইরিস স্ক্যান করানো। সর্বশেষে, মোবাইলে ১০৫ নাম্বার থেকে এনআইডি নাম্বার পাওয়া গেলে আইডি কার্ডের অনলাইন কপি সংগ্রহ করা।

এ সকল ধাপ গুলো পূরণ করার মাধ্যমেই একজন বাংলাদেশি নাগরিক তার এনআইডি কার্ড পেয়ে থাকে। এনআইডি কার্ড পাওয়ার ক্ষেত্রে বিস্তারিত আরো কিছু দিকনির্দেশনা নিচে দেওয়া হলো:

  • ভোটার আইডি কার্ড পেতে সর্বপ্রথম আপনার উপজেলা নির্বাচন অফিসে একটি আবেদন ফরম সংগ্রহ করবেন।
  • তারপর ভোটার আবেদন ফরমটি জন্ম নিবন্ধন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাগজের তথ্যানুসারে পূরণ করে জমা দিতে হবে।
  • আপনি চাইলে অনলাইনে ও এনআইডি কার্ডের আবেদন করতে পারবেন। তবে সে ক্ষেত্রেও উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে আবেদনের কপি জমা দিতে হবে। 
  • আবেদনপত্রের সাথে প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র এবং আপনার পরিচয়বাচক প্রমাণাদি সংযুক্ত করে জমা দিতে হবে।
  • আবেদন জমা দেওয়ার পর একটি টোকেন দেওয়া হবে। এর মধ্যে একটি নাম্বার/কোড লেখা থাকবে। মূলত এটাই হলো ভোটার স্লিপ/ ভোটার নিবন্ধন ফরম। 
  • তারপর নির্দিষ্ট তারিখে আপনাকে বায়োমেট্রিক দিতে ডাকা হবে। পূর্বে প্রাপ্তব ভোটার স্লিপ নিয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে আপনাকে বায়োমেট্রিক দিতে হবে। 
  • তারপর আপনাকে আইডি কার্ড পেতে অপেক্ষা করতে বলা হবে।
  • ২ সপ্তাহ বা সর্বোচ্চ ১ মাস পর আপনার দেওয়া মোবাইল নাম্বারে ১০৫ নাম্বার থেকে একটি এসএমএস আসবে। সেখানে আপনার এনআইডি নাম্বার উল্লেখ করা থাকবে।
  • এই নাম্বারটি পেলেই আপনি অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড যাচাই করে নিবেন। এ সময় আপনি চাইলে আইডি কার্ডের কপি অনলাইন থেকে ডাউনলোডও করতে পারবেন।

তবে ১মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও যদি ১০৫ নাম্বার থেকে এসএমএস না আসে, তাহলে ফরম নাম্বার দিয়েই NID Card চেক করে নিতে পারবেন।

এভাবে NID Card চেক করে যদি দেখেন আপনার আইডি কার্ডটি হয়ে গেছে, তাহলে অনলাইন কপি ডাউনলোড করে নিবেন।

আরও পড়ুনঃ ভোটার স্লিপ হারিয়ে গেলে করনীয় কি? কিভাবে আইডি কার্ড পাবেন

অনলাইনে এনআইডি কার্ড যাচাই

অনলাইনে এনআইডি কার্ড যাচাই করার জন্য services.nidw.gov.bd ওয়েব সাইটে যান। তারপর ১০৫ নাম্বার থেকে এসএমএস -এর মাধ্যমে মাধ্যমে পাওয়া nid নাম্বার লিখুন। পাশাপাশি আপনার জন্ম তারিখ লিখুন। তারপর ক্যাপচা পূরণ করে সার্চ করলেই পরবর্তী পেজে নিয়ে যাবে। 

এখান থেকে পরবর্তী পেজে গেলেই বুঝতে পারবেন আপনার আইডি কার্ডটি তৈরি হয়ে গেছে। তারপর অন্যান্য ধাপগুলো সম্পন্ন করে NID Card এর কপি অনলাইন থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন।

অন্যদিকে, ১০৫ নাম্বার থেকে এসএমএস না পেলে একইভাবে NID Card যাচাই করা যাবে। তবে সেক্ষেত্রে nid নাম্বারের স্থানে ভোটার স্লিপ নাম্বারটি লিখবেন।

কিছু ক্ষেত্রে ভোটার স্লিপ নাম্বার দিয়ে nid card যাচাই করলে, তথ্য ভুল দেখায়। সেক্ষেত্রে স্লিপ নাম্বারের পূর্বে NIDFN লিখে কোন স্পেস ছাড়াই স্লিপ নাম্বারটি লিখবেন। তাহলে পরবর্তী ধাপে যেতে পারবেন। 

যাইহোক, এভাবে লিখেও যদি তথ্য ভুল দেখায়, তাহলে বুঝবেন আপনার আইডি কার্ডটি এখনো তৈরি হয়নি।

আবার ১০৫ নাম্বারে এসএমএস পাঠিয়েও এনআইডি কার্ড চেক করা যাবে। সেক্ষেত্রে, এনআইডি কার্ড চেক করতে মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে NID <space> FORM NO <space> DD-MM-YYYY টাইপ করুন। তারপর ১০৫ (105) নাম্বারে পাঠিয়ে দিন। 

কিছুক্ষণের মধ্যেই রিপ্লাই মেসেজের মাধ্যমে আপনার এনআইডি কার্ডের স্ট্যাটাস জানিয়ে দিবে। আর কার্ডটি তৈরি হয়ে থাকলে সেই কার্ডের নাম্বার দিয়ে দিবে।

FAQ’s

এনআইডি কার্ডের ছবি কি পরিবর্তন করা সম্ভব?

হ্যাঁ। স্থানীয় উপজেলা নির্বাচন অফিসে আবেদন করে এনআইডি কার্ডের ছবি পরিবর্তন করা যাবে। এক্ষেত্রে সংশোধন ফরম পূরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহজ জমা দিয়ে এবং সংশোধন ফি পরিশোধ করে সরাসরি কার্ডধারী ব্যক্তিকে আবেদন করতে হবে।

নতুন আইডি কার্ড পেতে কতদিন লাগে? 

নতুন আইডি কার্ড পেতে ১৫ দিন থেকে ১ মাস সময় লাগে। কিছু ক্ষেত্রে ১ মাসেরও বেশি সময় লাগতে পারে।

NID কার্ড করতে কতদিন লাগে?

NID কার্ড করতে ৩০ দিনের মতো সময় লাগতে পারে।

শেষকথা 

উপরোক্ত আলোচনা থেকে জানতে পারলেন, ছবি তোলার কতদিন পর এনআইডি কার্ড পাওয়া যায়। আশাকরি, সম্পূর্ণ আলোচনাটি বিস্তারিতভাবে বুঝতে পেরেছেন। ধন্যবাদ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *