|

এন আইডি সংশোধন সংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা সমূহ

বাংলাদেশ এন আইডি সংশোধন সংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এখন থেকে সাধারণ নাগরিকদের জন্য এন আইডি সংশোধন করা হবে আরো সহজ।

পূর্বে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য আমাদের নানান ভোগান্তি ও জটিলতা সম্মুখীন হতে হতো। অনেক সময় উপযুক্ত প্রমাণাদি আবেদনপত্রের সাথে সাবমিট করলেও অযৌক্তিকভাবে বাড়তি ডকুমেন্ট চাওয়া হতো উপজেলা নির্বাচনে অফিস থেকে। কিন্তু বর্তমানে সে বিষয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। 

এখন থেকে এনআইডি সংশোধনের ক্ষেত্রে খুব বেশি ডকুমেন্টস বা কাগজপত্র লাগবে না। এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের এনআইডি অনুবিভাগের পরিচালক মোঃ শাহেদুন্নবী চৌধুরী। মূলত দেশের সাধারণ নাগরিকদের মাঠ পর্যায়ে এনআইডি সেবা সংক্রান্ত ভোগান্তি কমাতে ১২ টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন চায় যে সকল সাধারণ নাগরিকরা যেন স্বচ্ছতার সাথে ভোগান্তিহীন ভাবে তাদের এনআইডি সংশোধনের সেবা গ্রহণ করতে পারে। আবেদনকারীরা যদি আবেদনপত্রের সাথে উপযুক্ত প্রমাণপত্র সাবমিট করে তাহলে দ্রুতই তাদের আবেদনটি নিষ্পত্তি করতে হবে।

এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা দেশের সকল আঞ্চলিক, জেলা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। নিচে নির্বাচন কমিশনের সেই নির্দেশনা গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন আবেদন করার নিয়ম | NID Correction

এনআইডি সংশোধনে নির্বাচন কমিশনের ১২ নির্দেশনা

ভোটার আইডি কার্ডের বিভিন্ন তথ্য সংশোধনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন (EC) থেকে বেশ কিছু নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে ১২ টি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা নিচে তুলে ধরা হলো:

(১) দেশের সাধারণ নাগরিকদের দুর্ভোগ কমিয়ে আনার লক্ষে NID Card এর তথ্য সংশোধনের আবেদন গুরুত্বের সাথে নিষ্পত্তি করতে হবে। 

(২) সংশোধনের আবেদনের সময় আবেদনকারীর উপযুক্ত ডকুমেন্টস, যেমন: শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট, জন্ম সনদ কিংবা অন্যান্য যৌক্তিক প্রমাণপত্র থাকা সত্ত্বেও অযৌক্তিকভাবে বাড়তি প্রমাণপত্র, ডকুমেন্টস বা অতিরিক্ত কাগজপত্র চাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। 

(৩) আবেদন সাবমিট করার পর কর্তব্যরত কর্মকর্তাগণ তাদের আওতাভুক্ত (ক, খ ও গ) ক্যাটাগরির আবেদন গুলো যাচাই-বাছাই করে নিজেই অনুমোদন বা বাতিল করতে পারবে। 

আরও পড়ুনঃ ভোটার আইডি কার্ডের ছবি ও স্বাক্ষর পরিবর্তন করুন

(৪) সংশোধন আবেদন সাবমিট করার পর আবেদনের ক্যাটাগরি বিভাজন করতে হবে। তারপর সেই আবেদনের ক্যাটাগরি অনুযায়ী দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তাদের আওতাভুক্ত সংশোধনের আবেদন গুলো নিষ্পত্তি করবেন। 

(৫) ‘ক’ কাটাগরীর আবেদন ৭ কার্য দিবস, ‘খ’ ক্যাটাগরির আবেদন ১৫ কার্য দিবস এবং ‘গ’ ক্যাটাগরির আবেদন ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে অনুমোদন বা বাতিল করতে হবে।

(৬) জাতীয় পরিচয় পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগ থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে আবেদনের ক্যাটাগরি (ক, খ বা গ) বিভাজন করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা অঞ্চলভিত্তিক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সচেষ্ট থাকতে হবে।

(৭) সংশোধনের আবেদন সাবমিট করার পর দীর্ঘদিন যাবত সেই আবেদনটি অনুমোদন বা বাতিল না করে, অনিষ্পন্নভাবে রেখে দেওয়া যাবে না। বরং ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ তাদের আওতাধীন আবেদনসমূহ যাচাই-বাছাই করে নিষ্পত্তি করতে হবে। প্রয়োজনে যৌক্তিক কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পাশাপাশি শুনানী গ্রহণ করে অনুমোদন বা বাতিল করবে।

আরও পড়ুনঃ ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার নিয়ম ২০২৪

(৮) মাঠ পর্যায়ে সকল ক্যাটাগরির আবেদন নিষ্পত্তি করার ক্ষেত্রে সপ্তাহের ২ দিন শুনানী গ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে। শুনানী প্রদানের তারিখের পরবর্তী ১০ কার্য দিবসের মধ্যে আবেদন নিষ্পত্তির কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।

(৯) সংশোধন আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারা তাদের আওতাভুক্ত যেসকল আবেদনসমূহ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যর্থ হবে, সে সকল আবেদনসমূহের সাথে সাবমিট করা প্রমাণপত্র/ ডকুমেন্টস, তদন্ত প্রতিবেদন ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাদের সুস্পষ্ট মতামত সহ – জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক বরাবর প্রেরণ করবে। এক্ষেত্রে বিদ্যমান প্রজ্ঞাপনের নিমিত্তে সংশোধনের আবেদনটি ‘গ’ ক্যাটাগরী থেকে ‘ঘ’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরের জন্য সুপারিশ করতে হবে।

(১০) আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে কর্তব্যরত কর্মকর্তাদেরকে তাদের কার্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সফটওয়্যারে User Account টি অত্যন্ত সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে আবেদনটি অনুমোদন বা বাতিলের বিষয়টি জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে।

আরও পড়ুনঃ NID সংশোধন আবেদন বাতিল করার নিয়ম ২০২৪

(১১) সকল প্রকার লগ এনআইডি কেন্দ্রীয় ডাটাবেজে সংরক্ষিত থাকে। এতে করে প্রত্যেক ইউজার (কর্তব্যরত কর্মকর্তারা) তাদের কর্মকান্ডের জন্য জবাবদিহিতার আওতায় থাকবে।

(১২) যে সকল সাধারণ নাগরিকরা এনআইডি সংশোধনের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে ব্যর্থ হবে, সে সকল নাগরিকদেরকে উপজেলা নির্বাচন অফিসে অনলাইনে আবেদনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে হবে। হেল্প ডেক্স অনলাইন আবেদন সম্পর্কিত তথ্য ও সংশোধন সংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় ও উপযুক্ত প্রমাণপত্রের (প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসের) বিষয়ে তথ্য সরবরাহ করবে।

আরও পড়ুনঃ এন আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে?

মূলত উপরোক্ত দিকনির্দেশনা গুলো অনুসরণ করি বর্তমানে বাংলাদেশে ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধনের আবেদন নিষ্পত্তি করতে দায়িত্ববদ্ধ থাকেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *