নতুন ভোটার আবেদন ২০২৪ | অনলাইনে নতুন আইডি কার্ড করার নিয়ম
আপনি একজন ১৬ বছর বয়সী বাংলাদেশ নাগরিক হয়ে থাকলেই নতুন ভোটার আবেদন করতে পারবেন। এর জন্য নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম (NID Card Application) সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন এখানে।
ভোটার আইডি কার্ড হলো প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির নাগরিক অধিকার। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর দেশের যেকোন নাগরিক সেবা পেতে চাইলে, এই ভোটার আইডি কার্ড থাকা প্রায় বাধ্যতামূলক। অন্যথায়, দেশের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হয়।
একজন বাংলাদেশি নাগরিক হয়ে থাকলে আপনি উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে অথবা সরাসরি অনলাইনে NID Card Application করতে পারবেন।
নিজে নিজে নতুন ভোটার আবেদন করতে চাইলে, কিভাবে আবেদন ফরম পূরণ করবে, কখন কোথায় আবেদন করবে, ভোটার নিবন্ধন করতে কি কি লাগে, কত টাকা লাগে, কতদিন লাগে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া উচিত। সামগ্রিক তথ্যগুলো জানতেই সম্পূর্ণ পড়ে নিন এই লেখাটি।
নতুন আইডি কার্ড করার নিয়ম ২০২৪
নতুন আইডি কার্ড করার নিয়ম হলো, প্রথমে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করে ড্যাশবোর্ড থেকে প্রোফাইল অপশনে যান। তারপর ব্যক্তিগত তথ্য, ঠিকানা ও অন্যান্য তথ্য পূরণ করে, ডকুমেন্টস আপলোড করে আবেদন সাবমিট করুন।
এভাবে অনলাইনে নতুন ভোটার আবেদন সাবমিট করার পর, গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র গুলো সহ উপজেলা নির্বাচন অফিসে যান। সেখানে অনলাইন আবেদনের প্রিন্ট কপি ও অন্যান্য কাগজপত্র গুলো জমা দিন।
তারপর আপনার আবেদনের তথ্য যাচাই করে আপনাকে একটি নির্ধারিত তারিখে বায়োমেট্রিক প্রদানের জন্য যেতে বলবে। সেখানে বায়োমেট্রিক কার্যক্রম সম্পন্ন করে আসার পর, আপনার তথ্যগুলো প্রক্রিয়াকরণের জন্য বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পাঠানো হবে।
অতঃপর, ১০-১৫ দিনের মধ্যে আপনার আইডি কার্ডটি তৈরি হয়ে যাবে এবং অনলাইন থেকে তা ডাউনলোড করতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ Services nidw gov bd | NID কার্ডের সকল সেবা এক ঠিকানায়।
নতুন ভোটার হতে আবেদনকারী প্রার্থীর নির্ধারিত যোগ্যতা
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদনকারী প্রার্থীকে অবশ্যই নিম্নোক্ত শর্তাবলী পূরণ করতে হবে। তবেই সে বাংলাদেশের ভোটাধিকার পেতে নিবন্ধন করতে পারবে। এক্ষেত্রে আবেদনকারী প্রার্থীর নির্ধারিত যোগ্যতা সমূহ হলো:
- আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
- আবেদনকারীকে ১৬ বছরের বেশি বয়সী হতে হবে।
- এর আগে কোন এনআইডি কার্ডের জন্য নিবন্ধন করেনি এমন ব্যক্তি হতে হবে।
যদি একজন আবেদনকারীর মাঝে এসকল বৈশিষ্ট্যগুলো থেকে থাকে, তাহলে সে নতুন ভোটার হিসেবে নিবন্ধন করতে পারবে। আর পুরাতন ভোটাররা কিভাবে স্মার্ট কার্ড পাবেন, তা জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন।
আরও পড়ুনঃ স্মার্ট কার্ড কিভাবে পাবো ও কখন পাবো জেনে নিন।
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে যা যা লাগবে
নতুন ভোটার আবেদন করার জন্য আবেদনকারীকে বেশ কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হয়। এক্ষেত্রে সর্বপ্রথম অনলাইনে আবেদন করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও উপযুক্ত কাগজপত্র গুলোর ছবি আপলোড করতে হয়। তারপর আবার উপজেলা নির্বাচনে অফিসে আবেদন জমা দেওয়ার সময় সেই কাগজপত্র গুলোর কপি জমা দিতে হয়।
একজন ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে নির্বাচন অফিসে এবং অনলাইনে আবেদনের জন্য আপনার যে সকল কাগজপত্র গুলো দরকার হতে পারে, সেগুলোর তালিকা লিখে নিতে দেওয়া হলো:
- অনলাইনে নতুন ভোটার আবেদন করার পর প্রাপ্ত আবেদনের কপি প্রিন্ট করে জমা দিতে হয়।
- আবেদনকারীর ডিজিটাল বা অনলাইন করার জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি।
- পিতা-মাতা বা স্বামী-স্ত্রীর এনআইডি কার্ডের ফটোকপি।
- শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্র হিসেবে বিভিন্ন বোর্ড পরীক্ষার সার্টিফিকেট।
- বাড়ির বিদ্যুৎ বিলের কপি বা হোল্ডিং ট্যাক্স এর রশিদ।
- নাগরিকত্ব সনদ।
- রক্তের গ্রুপ টেস্ট করে, তার রিপোর্টের কপি।
- চাকরিজীবী হয়ে থাকলে এমপ্লয়ার আইডি বা কর্মক্ষেত্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার প্রত্যয়ন পত্র ইত্যাদি।
এছাড়াও নিবন্ধনের জন্য আবেদনকারীর বয়স তুলনামূলক বেশি হলে, নতুন ভোটার হওয়ার অঙ্গীকারনামা দিতে হবে। পাশাপাশি আপনার একটি সচল মোবাইল নাম্বার লাগবে। এসকল কাগজপত্র ও তথ্য গুলো থাকলেই আপনি নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে ২০২৪
অনলাইনে ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন | Bangladesh NID Application
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য উপরোক্ত শর্তাবলী পূরণ করে থাকলেই আপনি ভোটার নিবন্ধনের আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে অনলাইনে nidw.gov.bd ওয়েবসাইট থেকে, অথবা সরাসরি উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে আবেদন করা যায়।
নিজেই নিজের তথ্য পূরণ করতে চাইলে অনলাইনে আবেদন করতে পারেন। এর জন্য ধারাবাহিকভাবে নিজের সকল ধাপগুলো পূরণ করুন:
ধাপ ১: NID Application System এ প্রবেশ করুন
এনআইডি কার্ডের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে, সর্বপ্রথম nidw.gov.bd এই লিংকে ভিজিট করুন। এবার আপনার সামনে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের আবেদন পেজটি ওপেন হবে। এখান থেকে নতুন নিবন্ধনের জন্য “আবেদন করুন” লেখাতে ক্লিক করে পরবর্তী পেইজে যান।
ধাপ ২: নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে NID অ্যাকাউন্ট খুলুন
নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল সার্ভারে এনআইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে হলে, প্রথমে একটি অ্যাকাউন্ট রেজিস্টার করতে হয়। এক্ষেত্রে নতুন ভোটার আবেদনকারীকে তার নাম, জন্ম তারিখ, মোবাইল নাম্বার, ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দিতে হয়।
আরও পড়ুনঃ এনআইডি একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম | NIDW Account Registration
এখানে সর্বপ্রথম ইংরেজিতে আপনার সম্পূর্ণ নাম, জন্ম তারিখ এবং ৬ সংখ্যার যাচাইকরণ কোডটি লিখে দিতে হবে। এই তথ্যগুলোই আপনার আইডি কার্ডে লিপিবদ্ধ হবে। এগুলো পরবর্তীতে এডিট করা যায় না। তাই অবশ্যই সঠিক তথ্য দিয়ে একাউন্ট খুলবেন। তারপর ‘বহাল’ লেখাতে ক্লিক করলে নতুন পেইজে যাবে।
এবার আপনার একটি মোবাইল নাম্বার চাইবে। মোবাইল নাম্বারটি দিয়ে ‘বহাল’ লেখাতে ক্লিক করলে আপনার নাম্বার একটি ৬ সংখ্যার কোড আসবে। সেই ভেরিফিকেশন কোডটি লিখে পুনরায় ‘বহাল’ লেখাতে ক্লিক করুন।
সর্বশেষে আপনার একটি ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দিন। তারপর পাসওয়ার্ডটি পুনরায় দিয়ে কনফার্ম করুন। এই ইউজারনেমও পাসওয়ার্ড দিয়েই আপনি পরবর্তীতে অ্যাকাউন্টে লগইন করতে পারবেন।
আপনার তথ্যপূরণ সম্পন্ন হলে বহাল লেখাতে ক্লিক করে দিবেন। তাহলেই নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে আপনার একটি অ্যাকাউন্ট রেজিস্টার হয়ে যাবে।
ধাপ ৩: প্রোফাইল অপশনে তথ্য পূরণ করুন
নিবন্ধনের পর ড্যাশবোর্ডে লগইন করলেই ডানদিকে প্রোফাইল ও পাসওয়ার্ড পরিবর্তন অপশন পাবেন। এখান থেকে প্রোফাইল অপশনে ক্লিক করুন। প্রোফাইল অপশনেই এনআইডি কার্ডের যাবতীয় তথ্য পূরণ করতে হয়।
এখানে ব্যক্তিগত তথ্য, অন্যান্য তথ্য ও ঠিকানার তথ্য পূরণের জন্য আলাদা আলাদা ক্যাটাগরি পাবেন।
নতুন তথ্য সংযোজনের জন্য ক্যাটাগরি সিলেক্ট করে উপরের ডান পাশের ‘এডিট’ অপশনে ক্লিক করবেন। তাহলে প্রতিটি তথ্যের সাথে একটি করে ঘর পাবেন। সেখানে আপনার তথ্যগুলো পূরণ করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন আবেদন করার নিয়ম | NID Correction
ধাপ ৪: আবেদনকারীর ব্যক্তিগত তথ্যপূরণ
তিনটি ক্যাটাগরির মধ্যে আবেদনকারীর ‘ব্যক্তিগত তথ্য’ সম্পর্কিত একটি ক্যাটাগরি রয়েছে। মূলত এখানে নতুন ভোটার আবেদনকারীর নিজের তথ্য, পিতা-মাতা ও অভিভাবকের তথ্য এবং বৈবাহিক অবস্থার তথ্য দিতে হয়।
(বি:দ্র: তথ্য পূরণের ক্ষেত্রে লাল (*) চিহ্নিত ঘরগুলো অবশ্যই পূরণ করতে হবে।)
নিচে আবেদনকারীর তথ্য, পিতা-মাতা ও অভিভাবকের তথ্য এবং বৈবাহিক অবস্থার তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো:
- আবেদনকারীর তথ্যপূরণের ক্ষেত্রে বাংলায় আপনার সম্পূর্ণ নাম, জন্ম নিবন্ধন নম্বর, জন্মস্থানের তথ্য, লিঙ্গ, রক্তের গ্রুপ, জাতীয়তা ইত্যাদি পূরণ করুন। খেয়াল রাখবেন, অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন এর সময় দেওয়া ইংরেজি নাম ও জন্মতারিখ স্বয়ংক্রিয়ভাবে দেখাবে। তাই এগুলো পূরণ করতে হবে না।
- পিতা-মাতার তথ্য পূরণের ক্ষেত্রে, পিতা-মাতার নাম বাংলা ও ইংরেজিতে এবং তাদের NID নাম্বার লিখুন। মৃত ব্যক্তির ক্ষেত্রে মৃত্যুর সন লিখতে হবে। সেক্ষেত্রে যিনি মৃত্যুবরণ করেছেন, তার তথ্যের অপশনের ডান পাশের ‘মৃত’ লেখায় ক্লিক করুন। তারপর মৃত্যুর সন পূরণ করুন।
- অভিভাবকের তথ্য হিসেবে এখানে বড় ভাই/বোনের তথ্য পূরণ করতে পারেন। এই তথ্য পূরণ করা অপশনাল। পূরণ করতে চাইলে এখানে অভিভাবকের নাম ও এনআইডি নম্বর লিখুন।
- বৈবাহিক অবস্থার তথ্য পূরণের ক্ষেত্রে, ডানপাশের ড্রপডাউন মেন্যুতে ক্লিক করুন। তারপর আপনার বৈবাহিক অবস্থা বিবাহিত/ অবিবাহিত সিলেক্ট করুন। বিবাহিত হলে স্বামী/স্ত্রীর নাম ও এনআইডি নম্বর লিখবেন।
সকল তথ্য পূরণ করা সম্পন্ন হলে পরবর্তী লেখাতে ক্লিক করুন।
ধাপ ৫: আবেদনকারীর অন্যান্য তথ্য পূরণ করুন
আবেদনকারীর এনআইডি কার্ডের অন্যান্য তথ্য গুলোর মধ্যে রয়েছে শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা, ধর্ম ইত্যাদি। এখানে প্রতিটি তথ্যের জন্য আলাদা আলাদা ঘর পাবেন। সেই ঘরগুলোতে আপনার কাছে থাকা ডকুমেন্টস এর তথ্য অনুযায়ী সঠিক তথ্য পূরণ করতে হবে। যেমন:
- আবেদনকারী শিক্ষাগত যোগ্যতা।
- আবেদনকারীর বর্তমান পেশা।
- তার ধর্ম।
- আবেদনকারীর পাসপোর্ট নম্বর, যদি পাসপোর্ট থাকে।
- ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলে, তার নম্বর।
- আবেদনকারী টিম সার্টিফিকেট থাকলে, তার TIN নাম্বার।
- কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতা থাকলে অসমর্থতা অপশন সিলেক্ট করা।
- কোন জন্মগত সনাক্তকরণ চিহ্ন থাকলে, তার তথ্য।
- একটি সচল মোবাইল নাম্বার।
- তথ্য পূরণ সম্পন্ন হলে পরবর্তী অপশনে যান।
(বি:দ্র: এখানেও তথ্য পূরণের ক্ষেত্রে লাল (*) চিহ্নিত ঘরগুলো অবশ্যই পূরণ করতে হবে।)
ধাপ ৬: নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির ঠিকানার তথ্য দিন
এনআইডি কার্ড হল একজন ব্যক্তির সামগ্রিক পরিচয়বাচক তথ্যের সনদ। তাই এখানে ব্যক্তির ঠিকানার তথ্যও সংযুক্ত করতে হয়। ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম অনুযায়ী, নতুন ভোটার আবেদনকারীকে তার বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা তথ্য দিতে হয়।
ঠিকানার তথ্যপূরণের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত তথ্যগুলো ধাপে ধাপে পূরণ করতে হবে-
- সর্বপ্রথম অবস্থানরত দেশের নাম অপশনে ‘বাংলাদেশ’ সিলেক্ট করুন।
- এবার বর্তমান ঠিকানা অপশনে, আপনার অবস্থানরত ঠিকানার বিভাগ, জেলা, উপজেলা, সিটি কর্পোরেশন/ পৌরসভা, মৌজা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড নাম্বার, গ্রাম/রাস্তা, হোল্ডিং নাম্বার, পোস্ট অফিস ও পোস্ট কোড পূরণ করতে হবে।
- বর্তমান ঠিকানার মতই একইভাবে আপনার স্থায়ী ঠিকানারও তথ্য পূরণ করুন। বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা একই হলেও সমস্যা নেই।
- বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা ভিন্ন হলে, আপনি যে ঠিকানায় ভোটার হতে চাচ্ছেন, তা সিলেক্ট করুন। এর জন্য কাঙ্খিত ঠিকানার অপশনের পাশে ‘এই ঠিকানায় ভোটার’ লেখাটিতে টিক দিন।
খেয়াল রাখবেন, পরবর্তীতে আপনার সিলেক্ট করা ঠিকানাতেই ভোট দিতে পারবেন। তাই আপনার সুবিধা অনুযায়ী ভোটার এলাকা সিলেক্ট করুন।
আরও পড়ুনঃ ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার নিয়ম ২০২৪
ধাপ ৭: ডকুমেন্টস আপলোড করুন
অনলাইনে নতুন ভোটার আবেদন করার জন্য পূর্বে সকল গুরুত্বপূর্ণ কাগজ গুলোর স্ক্যান কপি বা ছবি জমা দিতে হতো। এবং পরবর্তীতে সেগুলো পুনরায় উপজেলা নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হতো। কিন্তু বর্তমানে অনলাইনে কাগজপত্র আপলোড করা বাধ্যতামূলক নয়। তাই উপজেলা নির্বাচন অফিসে পরবর্তীতে এগুলো জমা দিতে পারবেন।
অনলাইনে কাগজপত্র সাবমিট পেইজ আসলে, এখান থেকে সাবমিট লেখাতে ক্লিক করুন। তাহলে আপনাকে পরবর্তী পেইজে নিয়ে যাবে।
ধাপ ৮: ভোটার আবেদন সাবমিট করুন
সকল তথ্য পূরনের পর আপনাকে সর্বশেষ পেইজে নিয়ে যাওয়া হবে। এখান থেকে আবেদন নিশ্চিত করুন। তারপর পুনরায় আবেদন সাবমিট করার অপশন আসবে। সেখানে আপনার কোন তথ্য পরিবর্তনের প্রয়োজন মনে করলে, পুনরায় ‘পেছনে’ লেখাতে ক্লিক করে এডিট করতে পারবেন।
এডিট করার প্রয়োজন না থাকলে আবেদনটি চূড়ান্তভাবে সাবমিট করে দিবেন।
ধাপ ৯: নতুন ভোটার আবেদন ফরমের কপি ডাউনলোড করুন
অনলাইনে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য আবেদন সাবমিট করার পর একটি ভোটার আবেদন ফরম বা সামারি পেজ আসবে। এখানে থাকা ডাউনলোড লেখাতে ক্লিক করলেই আপনার ভোটার আবেদনের কপি ডাউনলোড হয়ে যাবে।
আরও পড়ুনঃ ভোটার স্লিপ হারিয়ে গেলে করনীয় কি? কিভাবে আইডি কার্ড পাবেন।
ধাপ ১০: স্থানীয় নির্বাচন অফিসে আবেদন জমা ও বায়োমেট্রিক ইন্টারভিউ
অনলাইনে নতুন ভোটার আবেদন পর ডাউনলোড করা নতুন ভোটার আবেদনের কপি সহ, ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন সেগুলো নিয়ে স্থানীয় উপজেলা নির্বাচনে অফিসে যান। সেখানে সকল তথ্যগুলো যাচাই করা হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আপনাকে বায়োমেট্রিক ইন্টারভিউয়ের জন্য যেতে বলবে।
বায়োমেট্রিক ইন্টারভিউয়ে আপনার ছবি, ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ও চোখ স্ক্যান করে রাখা হবে। তারপর এ সকল তথ্য সমন্বয় করে সরাসরি নির্বাচন কমিশনের প্রধান কার্যালয় পাঠানো হবে। সেখানে সেই তথ্যগুলো NIDW সার্ভারে আপলোড করে দেওয়া হবে।
তারপর ৭ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই আপনার NID Card এর তথ্য অনলাইনে পাবেন। তখন আপনি চাইলে অনলাইন কপি ডাউনলোড করেও ব্যবহার করতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ ছবি তোলার কতদিন পর এনআইডি কার্ড পাওয়া যায়?
ভোটার তথ্য হালনাগাদের সময় নতুন ভোটার আবেদন করার নিয়ম
বাংলাদেশের সকল প্রাপ্ত বয়স্ক নাগরিকদের ভোটার হিসেবে তালিকা করার জন্য নির্দিষ্ট সময় পর পর সারাদেশে একটি জরিপ চালানো হয়। এসময় জরিপের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সমগ্র বাংলাদেশে ঘুরে ঘুরে ভোটারের উপযুক্ত নাগরিকদের তথ্য হালনাগাদ করে।
পরবর্তীতে সেই সকল তালিকাভুক্তদের উপজেলা নির্বাচন অফিসে নিয়ে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। আপনার এনআইডি কার্ড তৈরি করা যদি ইমারজেন্সি না হয়ে থাকে, তাহলে এই হালনাগাদের জন্য অপেক্ষা করুন। এ সময় খুব সহজেই এবং বিনা খরচে এনআইডি কার্ড করতে পারবেন।
উপজেলা নির্বাচন অফিসে ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন
অনলাইনে নতুন ভোটার আবেদন ফরম পূরণ করে সাবমিট করার পরও পুনরায় উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে কাগজপত্র জমা দিয়ে আবেদন করতে হয়। তাই সেক্ষেত্রে সরাসরি উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে আবেদন করাই উত্তম।
এর জন্য স্থানীয় উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে ‘ভোটার নিবন্ধন ফরম ২’ সংগ্রহ করতে হবে। তারপর তা যথাযথ ভাবে পূরণ করে কাগজপত্রসহ জমা দিতে হবে।
সাধারণত উপজেলা নির্বাচন অফিসে আবেদন করাই তুলনামূলকভাবে সহজ। কিন্তু অনলাইনে আবেদন করলে নিজের তথ্য নিজেই টাইপ করা যায়। সেক্ষেত্রে সঠিক তথ্য লিপিবদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
অন্যদিকে, উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে আবেদন ফরমের তথ্য অনলাইনে সাবমিট করার সময় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিভিন্ন ধরনের ভুল করতে পারে। যা পরবর্তীতে সংশোধন করার প্রয়োজন হয় এবং বাড়তি ঝামেলা পোহাতে হয়।
তাই আপনার সুবিধা অনুযায়ী অনলাইনে বা সরাসরি উপজেলা নির্বাচনে অফিসে গিয়ে আবেদন করতে পারেন।
ভোটার আইডি কার্ড পেতে কতদিন লাগে?
সাধারণত নতুন ভোটার আবেদন করার পর ৭-১৫ দিনের মধ্যেই এন আইডি কার্ডের তথ্য সার্ভার আপলোড করা হয়। নির্বাচন অফিসে ছবি ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে আসার পর, সেই সকল তথ্যগুলো সমন্বয় করে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়। সেখানে থাকা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সেগুলো NIDW সার্ভারে আপলোড করে দেয়।
এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটিতে ৫-৭ কার্যদিবস সময় লেগে থাকে। এরপরেই আপনার আইডি কার্ডের সকল তথ্য অনলাইনে পাওয়া যাবে। অনলাইনে আপনার NID একাউন্টে লগইন করে সেই আইডি কার্ডের অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে পারবেন।
অন্যদিকে, আপনি যদি স্মার্ট কার্ড পেতে চান, তাহলে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হবে। কারণ বর্তমানে স্মার্ট কার্ড বিতরণের কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। সরকারিভাবে যখন স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে, তখন আপনার বাড়িতে সেটি পৌঁছে দেওয়া হবে।
আশাকরি ভোটার আইডি কার্ডের জন্য নতুন ভোটার আবেদন কিভাবে করবেন এবং কিভাবে আইডি কার্ড পাবেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত বুঝতে পেরেছেন। ধন্যবাদ।