স্মার্ট কার্ডে পাওয়া যাচ্ছে ২২ ধরনের সেবা
বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয় পত্রকে ডিজিটালাইজড করে স্মার্ট এন আইডি কার্ড প্রদান করা হচ্ছে। এখন থেকে এই স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে পাওয়া যাবে ২২ ধরনের সেবা।
ডিজিটাল স্মার্ট আইডি কার্ডটি প্লাস্টিকের (পলিমার দিয়ে) তৈরি মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী কার্ড। বাংলাদেশের এই Smart NID Card -এ ব্যক্তির নাম (বাংলা ও ইংরেজি), পিতা-মাতার নাম, জন্ম তারিখ ও NID নম্বর দৃশ্যমান থাকবে। কার্ডের পেছন দিকে থাকবে ব্যক্তির ভোটার এলাকার ঠিকানা, রক্তের গ্রুপ ও জন্মস্থানের তথ্য। এছাড়াও সব মিলিয়ে স্মার্ট কার্ডের মাইক্রো চিপটিতে ৩২ ধরনের তথ্য থাকবে। এই তথ্যভান্ডারের তথ্য গুলো মেশিনের মাধ্যমে পাঠযোগ্য হবে।
এছাড়াও স্মার্ট কার্ডের ডিজাইনে রয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় পাখি দোয়েল, জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও চা-পাতা, জাতীয় ফুল শাপলা, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ও বর্তমান সময়ের জাতীয় পতাকা এবং জাতীয় সংগীত। এগুলো চিত্রাংকন করে আমাদের স্মার্ট কার্ডকে আরো সুন্দর করা হয়েছে।
যাইহোক, বাংলাদেশী নাগরিকরা এই স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে কি কি সেবা পেতে পারে সে সম্পর্কে এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিন।
আরও পড়ুনঃ স্মার্ট কার্ড কিভাবে পাবো ও কখন পাবো জেনে নিন।
স্মার্ট কার্ডের ২২ ধরনের সেবা
বর্তমানে বাংলাদেশ স্মার্ট কার্ডের সেবা সমূহের অন্তর্ভূক্ত রয়েছে ২২ ধরনের সেবা। এ সকল সেবা সমূহ হলো:
- আয়করদাতা শনাক্তকরণ নাম্বার (Tax Identification Number পেতে)।
- নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে ও লাইসেন্স নবায়ন করতে।
- ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করতে।
- উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে।
- পোসপোর্ট তৈরি ও নবায়নে।
- যানবাহনের লাইসেন্স/ নিবন্ধনে।
- বিভিন্ন চাকরির আবেদন করতে।
- স্থাবর সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয় করতে।
- বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশন করার জন্য।
- ব্যাংক হিসাব খোলার জন্য।
- ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে।
- নির্বাচনের সময় ভোটার শনাক্ত করতে।
- সরকারি বিভিন্ন ভাতা পেতে।
- গ্যাস-পানি-বিদ্যুতের সংযোগ পেতে।
- টেলিফোন সংযোগ পেতে বা সিম রেজিস্ট্রেশন করতে।
- সরকারি ভর্তুকির ক্ষেত্রে।
- ই-টিকেটিং সেবা পেতে।
- বিমা স্কিমে অংশগ্রহণ করার জন্য।
- শেয়ার আবেদন ও বিও হিসাব খোলতে।
- বিজনেস আইডেনটিফিকেশন নম্বর পেতে।
- কোনো সিকিউরড ওয়েবসাইটে লগ ইন করার ক্ষেত্রে।
- আসামি ও অপরাধী শনাক্তকরণের আধুনিক প্রক্রিয়ায়।
স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে উপযুক্ত সেবাগুলো পাওয়া যাবে। যদিও এখনো পর্যন্ত আইনগতভাবে এ সকল সেবা পাওয়ার জন্য জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর প্রদান করা বাধ্যতামূলক করা হয়নি। তবে আপনি চাইলে স্মার্ট কার্ড ব্যবহার করে সেবাগুলো খেতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ
- সৌদি আরবে স্মার্ট কার্ড বিতরন শুরু হয়েছে।
- স্মার্ট কার্ডের বর্তমান স্ট্যাটাস অনলাইন থেকে জানবেন যেভাবে।
স্মার্ট কার্ডের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য
প্রতিটি ব্যক্তির স্মার্ট কার্ডের তথ্য ভান্ডারে বা মাইক্রো চিপটিতে ৩২ ধরনের তথ্য সংযুক্ত থাকে। স্মার্ট কার্ডের মধ্যে একজন ব্যক্তির যে সকল তথ্যগুলো থাকবে সেগুলো হলো: ব্যক্তির বয়স, স্থায়ী ঠিকানা, বর্তমান ঠিকানা, বৈবাহিক অবস্থা, জন্ম নিবন্ধন নম্বর, শিক্ষাগত যোগ্যতা, দৃশ্যমান শনাক্তকরণ চিহ্ন, ধর্ম, পেশা, লিঙ্গ, পাসপোর্ট নম্বর, ড্রাইভিং লাইসেন্স নম্বর, TIN নম্বর, ব্যক্তির মোবাইল নম্বর, মা-বাবা ও স্বামী বা স্ত্রীর পরিচয়পত্র নম্বর, মা-বাবা বা স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যুসংক্রান্ত তথ্য এবং অসমর্থ বা প্রতিবন্ধীর তথ্য ইত্যাদি।
এই সকল তথ্য স্মার্ট কার্ডের চিপ-এ সংরক্ষিত থাকে বলে একজন ব্যক্তি মোট ২৫ ধরনের নিরাপত্তা পেতে পারে। স্মার্ট কার্ডের ৩ স্তরে এই ২৫টি নিরাপত্তা-বৈশিষ্ট্য সংযোজিত রয়েছে।
এক্ষেত্রে ১ম স্তরের বৈশিষ্ট্যগুলো খালি চোখে দৃশ্যমান। ২য় স্তরের নিরাপত্তা-বৈশিষ্ট্যগুলো দেখার জন্য যন্ত্রের প্রয়োজন হয়। ৩য় স্তরের নিরাপত্তা-বৈশিষ্ট্যগুলো দেখতে ল্যাবরেটরিতে ফরেনসিক টেস্ট করাতে হয়। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করার মাধ্যমে কোন প্রতিষ্ঠান একজন ব্যক্তির স্মার্ট কার্ডের তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে পারবে।