NID সংশোধন আবেদন বাতিল করার নিয়ম ২০২৪

ভোটার আইডি কার্ডের কোন তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন করে থাকলে, এবং সেই আবেদন অপ্রয়োজনীয় মনে করে বাতিল করতে চাইলে, জেনে নিন NID সংশোধন আবেদন বাতিল করার নিয়ম।

বাংলাদেশী NID কার্ডের কোন ১টি তথ্য ১ বারের বেশি সংশোধন করা যায় না। অনেক সময় আমরা তাৎক্ষণিক প্রয়োজনে বিভিন্ন তথ্য সংশোধনের আবেদন করে থাকি। 

কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে এমন হয় যে, তথ্যটি সংশোধন না করলেই ভালো হতো। কিংবা তথ্য সংশোধিত হলে, নতুন তথ্য নিয়ে আরও ঝামেলায় পড়তে হতে পারে। 

এমতাবস্থায়, অনেকেই চায় আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধনের সেই আবেদনটি বাতিল করে দিতে। মূলত এনআইডি সংশোধনের আবেদনটি এপ্রুভ হওয়ার আগে পর্যন্ত সেই সংশোধনের আবেদনটি বাতিল করা যায়। 

তাই আপনিও যদি ভুলক্রমে কোন তথ্য সংশোধনের আবেদন করে থাকেন, তাহলে আবেদন এপ্রুভ হওয়ার আগেই তা বাতিলের জন্য দরখাস্ত করুন। আপনাদের সুবিধার জন্য, NID সংশোধন আবেদন বাতিল করার নিয়ম এবং দরখাস্তের নমুনা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য থাকছে এই লেখাতে।

NID সংশোধন আবেদন বাতিল করার নিয়ম

NID সংশোধন আবেদন বাতিল করার জন্য স্থানীয় উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিসারের নিকট একটি দরখাস্ত করতে হবে। দরখাস্ত ব্যক্তির নাম, NID Number, জন্ম তারিখ ও সংশোধন আবেদন বাতিল করার উদ্দেশ্য লিখতে হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আপনার সংশোধনের আবেদনটি বাতিল করে দিবে।

সাধারণত, আইডি কার্ডের কোন তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন করলে, আবেদনটি এপ্রুভ হতে ৭-৪৫ দিন সময় লাগে। আবেদনের ক্যাটাগরির উপর এপ্রুভ হওয়ার সময় নির্ভর করে।

যাই হোক, আপনার আবেদনটি বাতিল করতে চাইলেও আবেদন সাবমিট করার ৭-৪৫ দিনের মধ্যেই NID সংশোধন আবেদন বাতিল করার দরখাস্ত জমা দিতে হবে। কারণ, আবেদনটি অ্যাপ্রুভ হয়ে তথ্য সংশোধিত হওয়ার পর বাতিল করার দরখাস্ত করলে, বাতিল করা যাবে না। 

আরও পড়ুনঃ Services nidw gov bd | NID কার্ডের সকল সেবা এক ঠিকানায়

NID সংশোধন আবেদন বাতিলের দরখাস্ত জমা পদ্ধতি

স্থানীয় নির্বাচন অফিসেই সংশোধন আবেদন বাতিলের দরখাস্ত দিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার সুবিধা অনুযায়ী হাতে লিখে বা কম্পিউটারে টাইপ করে দরখাস্ত লিখতে পারে। 

তবে চেষ্টা করবেন, যেন সাবলীল ও স্বতঃস্ফূর্ত ভাষায় আবেদনপত্রটি লেখা যায়। নিজে না পারলে স্থানীয় কোন কম্পিউটারের/ আইটি সেবার দোকান থেকে লিখিয়ে নিতে পারেন।

হাতে লিখলে দরখাস্তটি A4 সাইজের কাগজে সঠিকভাবে রোলিং করে লিখবেন। লেখাগুলো স্পষ্ট ভাবে ও ওভার রাইটিং মুক্ত হলে ভালো হয়। 

অথবা, যদি পারেন IT Service প্রদানকারী দোকান দোকান থেকে লেখালে, তারা পূর্বে তৈরিকৃত ফরমে সুন্দরভাবে লিখে দিবে।

যাই হোক, অনেকেই বুঝতে পারেন না NID সংশোধন আবেদন বাতিল করার দরখাস্ত টি কিভাবে শুরু ও শেষ করবে। এবং এর অভ্যন্তরীণ বাক্যগুলো কেমন হবে সে বিষয়ে আমাদের দ্বিধা থাকতে পারে। 

তাই আপনাদের সুবিধার জন্য, আইডি কার্ড সংশোধন আবেদন বাতিল করার দরখাস্তের নমুনা ও ছবি নিচে দেওয়া হলো।

আরও পড়ুনঃ ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন আবেদন করার নিয়ম | NID Correction

NID সংশোধন আবেদন বাতিল করার দরখাস্তের নমুনা ও ছবি

দরখাস্তের নমুনা নিচে লিখে দেওয়া হলো:

তারিখ: ১২/০৮/২০২৪

বরাবর,

উপজেলা নির্বাচন অফিসার

টিকাটুলি, ঢাকা – ১২০৩

বিষয়: NID সংশোধন আবেদন বাতিল করার জন্য আবেদন।

জনাব,

সবিনয় নিবেদন এই যে আমি মোঃ হৃদয় আহমেদ; পিতা: মোঃ ফরিদ উদ্দিন; গ্রাম/মহল্লা: গোপীবাগ; ডাকঘর: টিকাটুলি-১২০৩; জেলা: ঢাকা, বিগত ০৭/০৮/২০২৪ ইং তারিখে আমার ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধনের জন্য অনলাইনে আবেদন করেছিলাম। আমার NID নাম্বার ১২৩ ৪৫৬ ৭৮৯০; জন্ম তারিখ: ০৯/০৯/২০০২ ইং। আমার NID কার্ডের তথ্য সংশোধনের এই অনলাইন আবেদনটি এখনো অনুমোদিত হয়নি।

আমি যেই প্রয়োজনীয়তায় আমার জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন করেছিলাম, তা সমাধান হয়ে গেছে। তাই আমি উক্ত এনআইডি সংশোধনের আবেদনটি বাতিল করতে চাচ্ছি। 

অতএব, মহোদয়ের নিকট বিনীত আবেদন এই যে, আমার উক্ত NID সংশোধন আবেদনটি বাতিল করে আমাকে বাধিত করবেন।

বিনীত নিবেদক –

নাম: মোঃ হৃদয় আহমেদ

NID নাম্বার: ১২৩ ৪৫৬ ৭৮৯০

মোবাইল: ০১৩০১০১০১০১১

উপরোক্ত দরখাস্তের নমুনাটি ছিল, আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধনের আবেদন বাতিল করার জন্য উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিসারের কাছে দরখাস্ত লেখার নমুনা।

আপনি এই নমুনা অনুসরণ করে নিজে নিজে স্পষ্টভাবে হাতে লিখতে পারেন। অথবা, স্থানীয় কোন আইটি সেবা প্রদানকারী কম্পিউটারের দোকান থেকে টাইপ করিয়ে নিলে বেশি ভালো হয়। 

সেখানে নিম্নোক্ত তথ্যগুলো নিজের তথ্যের সাথে মিল রেখে লিখতে হবে: 

  • আবেদনকারীর নাম,
  • পিতার নাম,
  • গ্রাম/মহল্লা,
  • ডাকঘর, 
  • জেলা, 
  • সংশোধনের জন্য আবেদনের তারিখ, 
  • আবেদনকারীর এনআইডি নাম্বার, 
  • জন্ম তারিখ, 
  • আবেদনকারীর মোবাইল নাম্বার।

এ সকল তথ্যগুলো আপনাদের ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে পূরণ করে দরখাস্তটি লেখা সম্পন্ন করতে হবে। 

তারপর সরাসরি উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে নির্বাচন কমিশন অফিসারের কাছে জমা দিতে হবে। তিনি সবকিছু সঠিক মনে করলে আবেদনটি এপ্রুভ করবে এবং আপনার সংশোধন আবেদন বাতিল করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

আরও পড়ুনঃ ভোটার আইডি কার্ডের ছবি ও স্বাক্ষর পরিবর্তন করুন

NID সংশোধন আবেদন বাতিল ফরম pdf

ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধনের আবেদন বাতিল করার জন্য সরকারি ফরম নেই। এক্ষেত্রে লিখিত আবেদন করলেই হয়। 

তবে, অনেকেই লিখিত আবেদনের জন্য পূর্বে তৈরিকৃত ফরম খুঁজে থাকে। তাই আমাদের উপরের দরখাস্তের নমুনাটিকে আমরা ফরম হিসেবে ব্যবহার করতে পারি।

এখানে প্রতিটি ব্যক্তির আলাদা আলাদা নাম ঠিকানা লেখার জায়গাগুলো ফাঁকা রেখে বাকি তথ্যগুলো একই হবে।

যাই হোক, নিচে সংশোধন আবেদন বাতিল করার ফরমের পিডিএফ কপির লিংক যুক্ত করা হলো। আপনি এখান থেকে লিংকে প্রবেশ করে পিডিএফ কপিটি ডাউনলোড করে, তা ফরমের মত পূরণ করতে পারবেন।

Nid সংশোধন আবেদন বাতিল ফরম pdf

আরও পড়ুনঃ

কতদিনের মধ্যে এনআইডি সংশোধন আবেদন বাতিল করতে দরখাস্ত জমা দিতে হয়?

এনআইডি কার্ড সংশোধনের আবেদন করার পর আবেদন অনুমোদিত হওয়ার পূর্বে, অর্থাৎ ৪৫ দিনেই আগেই আবেদন বাতিলের দরখাস্ত করতে হবে।

যাই হোক, মূল কথা হলো- আপনার সংশোধনের আবেদনটি এপ্রুভ হওয়ার আগেই তা বাতিলের জন্য দরখাস্ত জমা দিতে হবে। আবেদন এপ্রুভ হয়ে গেলে, সেই আবেদনটি বাতিলের জন্য দরখাস্ত দিলেও তা গ্রহণযোগ্য হবে না।

FAQ’s

এন আইডি সংশোধন আবেদন কি আদৌ বাতিল করা যায়? 

হ্যাঁ। সংশোধনের আবেদনটি এপ্রুভ হওয়ার আগে পর্যন্ত যেকোনো সময় এটি বাতিল করতে পারবেন। এর জন্য সরাসরি স্থানীয় উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিসারের কাছে দরখাস্ত জমা দিতে হবে।

এনআইডি সংশোধনের আবেদন বাতিল করতে কোথায় আবেদন করতে হয়?

ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধনের আবেদন বাতিল করতে চাইলে, সরাসরি স্থানীয় উপজেলা নির্বাচন অফিসে লিখিত আবেদন করতে হবে।

NID সংশোধনের আবেদন বাতিল হতে কত দিন লাগে?

আপনি যদি NID সংশোধন আবেদন বাতিল করার জন্য উপজেলা নির্বাচন অফিসে দরখাস্ত জমা দেন, তাহলে ৭-১৫ দিনের মধ্যেই আবেদনটি বাতিল করে দেওয়া হবে।

NID সংশোধন আবেদন বাতিল করতে কত টাকা লাগে?

আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধনের আবেদন বাতিল করতে কোন সরকারি ফি দিতে হয় না। নিজেই একটি A4 সাইজের পেপারে উপরোক্ত নমুনা অনুসরণ করে দরখাস্ত লিখে জমা দিতে পারবেন। তাহলেই সংশোধন আবেদন বাতিল করে দেওয়া হবে।

শেষকথা 

এই ছিল NID সংশোধন আবেদন বাতিল করার নিয়ম সম্পর্কে আমাদের আজকের বিস্তারিত আলোচনা। চেষ্টা করবেন, আইডি কার্ড সম্পর্কিত কোন তথ্য সংশোধনের আবেদন করার আগে অবশ্যই ভালোভাবে ভেবে নিতে। 

কারণ, অপ্রয়োজনে তথ্য সংশোধন করে বাড়তি ঝামেলার সম্মুখীন হতে পারেন। তাই আবেদনের আগেই সচেতন থাকা উচিত। যাইহোক, অপ্রয়োজনীয় আবেদন করে ফেললে উপরোক্ত পদ্ধতিতে তা বাতিল করে নিতে পারবেন। ধন্যবাদ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *